uncategorized

গাড়ির এয়ারব্যাগের অ আ ক খ

প্রাক কথন

এই ব্লগটি লেখার সময়ে আমাকে সহযোগিতা করার জন্য নাভিদ মাহবুব ভাই কে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভূমিকা

যারা গাড়ি চালান বা গাড়ির সাথে কোনোভাবে জড়িত, তারা প্রায় সবাই “এয়ারব্যাগ” শব্দটির সাথে পরিচিত। গাড়ির সেফটি সিস্টেমের একটি অংশ হলো এয়ারব্যাগ। এটি প্যাসিভ সেফটি সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত প্রযুক্তি।

এয়ারব্যাগ কি?

গাড়ি এক্সিডেন্ট করলে গাড়ির কোন কিছুকে থামাতে অনেক বড় পরিমান বল প্রয়োগ করতে হয়। কারন, সংঘর্ষ ঘটলে গাড়ির ভরবেগ মুহুর্তে পরিবর্তন হয় যা গাড়ির যাত্রীর হয়না। এর কারন হল, অপর্যাপ্ত সময়। এই অপর্যাপ্ত সময়ে বল প্রয়োগের মাধ্যমে যতটা সম্ভব কম ক্ষতি করার মাধ্যমে যাত্রীর ভরবেগ থামিয়ে দেয় এক প্রকারের সিস্টেম যাকে রেস্ট্ররেইন্ট সিস্টেম বলে।

এয়ারব্যাগ এমনই একটি রেস্ট্রেইন্ট সিস্টেম। এয়ারব্যাগ এর কাজ হল যাত্রীর কোন ক্ষতি না করে তাদের ভরবেগ একদম কমিয়ে ফেলা। তবে, এই জন্য এয়ারব্যাগ কে অনেক শক্তি প্রয়োগ করতে হয়, যা এক কথায় অনেক বেশী। সাধারণত স্টিয়ারিং হুইল ও ড্যাশবোর্ডের ভিতরে এয়ারব্যাগ থাকে এবং গাড়ির সংঘর্ষ হলে এই এয়ারব্যাগ কার্যকর হতে সময় লাগে খুবই সূক্ষ ভগ্নাংশ সেকেন্ড।

এয়ারব্যাগের ইতিহাস

গাড়ির জন্য নির্দিষ্টভাবে এয়ারব্যাগ উদ্ভাবন ও তৈরীর স্বীকৃতি লাভ করেন যুক্তরাষ্ট্রের জন হেট্রিক, যিনি ১৯৫৩ সালে তার উদ্ভাবিত এয়ারব্যাগের জন্য পেটেন্ট লাভ করেন। প্রায় একই সময়ে জার্মানির ওয়ারল্টার লিন্ডারারও এয়ারব্যাগের জন্য পেটেন্ট লাভ করেন। শুরুর দিকের এয়ারব্যাগগুলোতে সংকুচিত গ্যাস ব্যবহার করা হতো এয়ারব্যাগ প্রসারিত হওয়ার জন্য। এই এয়ারব্যাগগুলোর কর্মদক্ষতা ভালো থাকলেও গাড়ির বাইরের তাপমাত্রার প্রভাব এয়ারব্যাগের ভেতরে থাকা গ্যাসের চাপ পরিবর্তন করে ফেলতো। যদি বাইরের তাপমাত্রা বেশি হয়, তাহলে চাপ অনেক বেশি হতো আর তাপমাত্রা কম হলে চাপ কম হতো, যার ফলে এয়ারব্যাগ ঠিক মত কাজ করতোনা। দেখা যেত চাপ বেশি হয়ে গেলে এয়ারব্যাগ এত জোরে প্রসারিত হতো যে যাত্রীর আহত হওয়ার আশংকা দেখা যেত, আবার চাপ কম হলে এয়ারব্যাগ প্রসারিতই হতে পারতোনা।

১৯৬৪ সালে ইয়াসুজাবুড়ো কবরী নামের একজন জাপানি প্রকৌশলী এয়ারব্যাগ সেফটি নেট নামের একটি ভিন্নধরনের এয়ারব্যাগ তৈরী করেন যার ফলে তিনি ১৪টি দেশ থেকে পেটেন্ট লাভ করেন, যদিও এয়ারব্যাগ ব্যবহারের ব্যাপক প্রসার হওয়ার আগেই ১৯৭৫ সালে তিনি মারা যান।

১৯৬৭ সালে এলেন কে ব্রিড সেন্সর ব্যবহৃত এয়ারব্যাগ উদ্ভাবন করেন। ৭০ এর দশকের শুরু থেকে জেনারেল মোটর্স তাদের গাড়িতে এয়ারব্যাগ ব্যবহার শুরু করে। এভাবে, বর্তমানে প্রায় সব গাড়িতেই কম বেশি এয়ারব্যাগ ব্যবহৃত হয়। শুরুতে শুধু সামনে চালকের আসনে এয়ারব্যাগ ব্যবহৃত হলেও, এখন সামনের যাত্রীর আসন এবং পেছনে যাত্রীর আসনেও যাত্রীর নিরাপত্তার জন্য এয়ারব্যাগ ব্যবহৃত হচ্ছে।

এয়ারব্যাগের বিভিন্ন অংশ এবং এটি কিভাবে কাজ করে?

একটি এয়ারব্যাগের তিনটি অংশ রয়েছে। যথা-

• ব্যাগ

• সেন্সর

• কেমিক্যাল বা রাসায়নিক

ব্যাগ

এয়ারব্যাগের প্রধান অংশ হল এই ব্যাগ। হালকা নাইলন ফেব্রিক্স দিয়ে তৈরী এই ব্যাগ ভাজ করে স্টিয়ারিং উইল বা ড্যাশবোর্ডের ভিতর রাখা থাকে। গাড়ির সংঘর্ষ ঘটা মাত্রই ৪০ মিলিসেকেন্ড এর মধ্যে সম্পুর্নরূপে ফুলে ওঠে। এই ব্যাগ ৮০ থেকে ১০০ মিলিসেকেন্ডের মধ্যে বাতাস বের করে দেয় যার ফলে হতাহতের সম্ভাবনা প্রায় থাকেনা বললেই চলে। এয়ারব্যাগ ব্যবহারের ফলে দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। এয়ারব্যাগ না থাকলে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশী হত এবং তাৎক্ষনিক মৃত্যুও হত। নিম্নে একটি এয়ারব্যাগ ফুলে ওঠার চিত্র তুলে ধরা হল।

সেন্সর

সেন্সর মাইক্রোচিপের মাধ্যমে সংঘর্ষের তথ্য সংগ্রহ করে। গাড়ির কোন সংঘর্ষ হলে বৈদ্যুতিক সংযোগ এর একটি সুইচ সেন্সর কে গাড়ী সংঘর্ষের তথ্য পাঠায় এবং সেন্সর তখন এয়ারব্যাগ কে ফুলে ওঠার নির্দেশ দেয়।

Chemical বা রাসায়নিক

গাড়ি সংঘর্ষের ফলে এয়ারব্যাগ যে ফুলে ওঠে, তা সম্ভব হয় এয়ারব্যাগে কিছু রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের মাধ্যমে। এয়ারব্যাগে সোডিয়াম এজাইড (NaN3) ও পটাশিয়াম নাইট্রেট (KNO3) বিক্রিয়ার মাধ্যমে নাইট্রোজেন গ্যাস তৈরী হয় যা এয়ারব্যাগ কে ফোলায়। এয়ারব্যাগ সিস্টেম মূলত এক প্রকার বিস্ফোরক পদার্থকে প্রজ্জ্বলিত করে যা অনেক দ্রুত এয়ারব্যাগ কে ফোলানোর জন্য নাইট্রোজেন গ্যাস তৈরী করে।

গাড়ির সামনের এয়ারব্যাগ বা Frontal Airbag

একটি গাড়ি যখন সামনের দিকে সংঘর্ষ হয়, তখন সামনে বসা চালক বা যাত্রী যদি সিটবেল্ট পড়া থাকে, সেক্ষেত্রে তার শরীর, সিটবেল্ট লক হওয়া পর্যন্ত তুলনামূলক সামনে চলে আসে। এছাড়া, সিটবেল্টের নিচের অংশের (ল্যাপ বেল্ট) প্রভাবে শরীর নিচের দিকে নামে কিছুটা। ল্যাপবেল্টের প্রভাব এবং বেল্টের দীর্ঘায়াতকরনের সীমাবদ্ধতার ফলে অনেক সময়ে চালক বা যাত্রীর মাথা ঘুরে যায় এবং হতাহতের হার বাড়ে। এই মাথা ঘুরে যাওয়ার প্রবণতা হ্রাসে ফ্রন্টাল এয়ারব্যাগের ভূমিকা অনেক। এছাড়া, গাড়ির ভেতরে স্টিয়ারিং, ড্যাশবোর্ড ইত্যাদির সাথে ধাক্কা লাগা থেকেও মাথাকে প্রতিরোধ করে।

এয়ারব্যাগ সিস্টেম গঠিত হয় পাইরোটেকনিক পাউডার কন্টেনার, এয়ারব্যাগ, সেন্সর, ইলেক্ট্রিক কন্ট্রোল ইউনিট, ট্রান্সমিটার ইত্যাদির সমন্বয়ে। এয়ারব্যাগে যে গ্যাস থাকে, তা উৎপন্ন হয় পাইরোটেকনিক পাউডার ব্যবহার করে। এয়ারব্যাগের ব্যাগ তৈরীতে পলিয়েস্টার ব্যবহার করা হয়।

সম্মুখভাগের এয়ারব্যাগ বা Frontal Airbag

দুর্ঘটনা ঘটার পর সামনে barrier এর প্রভাব এবং গতি যাচাই ও পর্যবেক্ষন করে ইলেক্ট্রিক কন্ট্রোল ইউনিট সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর পাইরোটেকনিক পাউডার কন্টেনারে থাকা পাউডার গ্যাস তৈরী করে যা এয়ারব্যাগের ব্যাগে প্রবেশ করে।

এয়ারব্যাগ মূলত তখনই কাজ করবে যখন যাত্রী এবং চালক সিটবেল্ট বাধবেন। তবে, যুক্তরাষ্ট্র এমন ধরনের এয়ারব্যাগ তৈরী করেছে যা সিটবেল্ট না বাধলেও কাজ করবে। তবে এক্ষেত্রে, এয়ারব্যাগের প্রেসার বা চাপ অনেক বেশি হতে হয়। কারন সিটবেল্ট বাধা অবস্থায় থাকলে শুধু মাথা প্রতিরোধ ও রক্ষা করার জন্য এয়ারব্যাগ কাজ করার প্রয়োজন হয় যেহেতু শরীরের বাকি অংশ সিটবেল্টে বাধা থাকে এবং দূর্ঘটনার পর সিটবেল্ট লক হয়ে যায়। অন্যদিকে সিটবেল্ট না বাধা থাকলে, মাথা ছাড়াও পুরো শরীরকে প্রতিরোধ করতে হয় এবং এজন্য এয়ারব্যাগের বেশি প্রেসার থাকতে হয় কেননা তখন এয়ারব্যাগকে ৫ গুণ বেশী ভর absorb করতে হয়।

এয়ারব্যাগ ব্যবহারের প্রভাব ও এয়ারব্যাগের ফলে হতাহত ও মৃত্যুর কারন ও তার সমাধান

বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, এয়ারব্যাগ ব্যবহারের ফলে দূর্ঘটনায় হতাহত ও মৃত্যুর হার অনেক হ্রাস পেয়েছে।

তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে গাড়ীর সামনের (ড্যাস বোর্ডেড়) এয়ার ব্যাগের মাধ্যমে যাত্রী আহত বা নিহতও হতে পারে । যেমন -

(১) যাত্রীর শরীর বা শরীরের কোন অংশ (মাথা, হাত...) ড্যাস বোর্ডের এয়ার ব্যাগের বেশী কাছে থাকলে

(২) কোলের শিশুকে বাচ্চাদের "কার সিটে" পশ্চাতমুখি অর্থাত শিশু গাড়ীর পশ্চাতমুখি থাকলে (শিশুর মাথা সে ক্ষেত্রে ড্যাস বোর্ডের খুবই কাছে)

এছাড়া, সিটবেল্ট সঠিকভাবে না বাধলে এবং গাড়ির সিটে ঠিকভাবে না বসলেও এয়ারব্যাগের মাধ্যমে হতাহত বা মৃত্যু হতে পারে।

এধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য যাত্রী বা শিশুকে সঠিকভাবে সিটে বসতে হবে এবং সিস্টেম কে শিশু বা যাত্রীর বসার অবস্থান, আকার ইত্যাদি সঠিকভাবে শনাক্ত করতে হবে, তাহলে এয়ারব্যাগ প্রসারিত হলেও অনাকাঙ্ক্ষিত হতাহতের আশংকা হ্রাস পাবে। সাধারনত আল্ট্রাসনিক ও ইনফ্রারেড রেডিয়েশন ইত্যাদির সমন্বয়ে বিভিন্ন ধরনের সিট সেন্সর ব্যবহার করা হয়।

এধরনের সেন্সর নিয়ে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রের পেটেন্ট লাভ করেছেন একজন বাংলাদেশী প্রকৌশলী। নাভিদ মাহবুব কে আমরা কম বেশি সবাই চিনি। তার স্ট্যান্ড আপ কমেডির হাস্যরসে মজা পায়নি এমন মানুষ পাওয়া কঠিন, আমি নিজেও তার বড় ভক্ত। স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান হিসেবে ছাড়াও তার আরেকটি পরিচয় আমরা অনেকেই জানি, তিনি একজন ইঞ্জিনিয়ার। বাংলাদেশে আইবিএম এর সিইও হিসেবে অনেকদিন কাজ করেছেন, এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে তিনি ফোর্ড, টাকাটা কর্পোরেশন, কোয়ালকমেও কাজ করেছেন। Occupant sensor নিয়ে তিনি কাজ করেছিলেন এবং তিনি এর জন্য পেটেন্ট লাভ করেন। তার Occupant sensor কি এবং এয়ারব্যাগে কিভাবে কাজ করে তা সম্পর্কে আমরা জানবো এখন।

বাংলাদেশী প্রকৌশলী নাভিদ মাহবুব, তিনি Occupant Sensor নিয়ে কাজ করে পেটেন্ট লাভ করেন

Occupant Sensor থ্রিডি ইমেজিং সিস্টেম ব্যবহার করে কোন বস্তুর থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরী করে। উক্ত ছবি থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত অংশ বাদ দিয়ে প্রয়োজনীয় অংশ সনাক্ত করে। একটি অংশে এটি থ্রিডি ছবিকে অন্য একটি থ্রিডি ছবিতে রুপান্তর করে এবং সেখান থেকে দ্বিমাত্রিক অভিক্ষেপ নির্নয় করা হয় এবং সেখান থেকে occupant এর আকার, ধরন ইত্যাদি সনাক্ত ও নির্নয় করা হয়। গাড়ির সেফটি সিস্টেম উক্ত উপাত্তগুলো ব্যবহার করে কাজ করে ও সিদ্ধান্ত নেয়।

Occupant Sensor থেকে প্রাপ্ত ত্রিমাত্রিক ছবি ও উপাত্ত Occupant এর একটা আনুমানিক আয়তনের মান প্রদান করে তার আকারের উপর ভিত্তি করে। এখন প্রশ্ন হলো এই আনুমানিক আয়তন ও আকারের মান কি কাজে লাগে এয়ারব্যাগে? দুর্ঘটনার পর এয়ারব্যাগ প্রসারিত হতে সাহায্য করে এবং এয়ারব্যাগ প্রসারনের ক্ষেত্রে সিস্টেমের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা সহজ হয়। যেমন এয়ারব্যাগ কোন ক্ষেত্রে প্রসারিত হবে, প্রসারন বেশি হবে না কম হবে এগুলো সিদ্ধান্ত সিস্টেম গ্রহন করে উক্ত উপাত্তগুলোর মাধ্যমে।

Occupant sensor এর মাধ্যমে চালকের ছবি সনাক্ত করে চালকের সাইডের এয়ারব্যাগ প্রসারিত হতে ভূমিকা পালন করে। ধরা যাক, আলোচ্য সেন্সর ব্যবহার করে সিস্টেম চালকের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করলো যেমন চালক কিভাবে কোন অবস্থানে বসেছে, তার মাথা ও হাত কিভাবে আছে বা কাজ করছে, তার নড়নচড়ন কিভাবে হচ্ছে, সিস্টেম এরপর এই উপাত্ত ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত নিবে এবং সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এয়ারব্যাগ প্রসারিত হবে।

Side Protection

Frontal Airbag এর সাফল্যের পর সুইডেনের বিখ্যাত গাড়ি নির্মান প্রতিষ্ঠান ভলভো সাইড এয়ারব্যাগ নিয়ে আসে।

সাধারনত গাড়ির সামনের অংশে ড্যাশবোর্ড এবং স্টিয়ারিং থেকে যাত্রী বা চালকের দুরত্বের চেয়ে, গাড়ির দরজার পাশের আসনে বসা যাত্রীর সাথে গাড়ির দরজার ভেতরের অংশের দূরত্ব তুলনামূলক কম হয়। ফলে, এয়ারব্যাগকে খুব দ্রুত সক্রিয় হতে হয়। এবং এজন্য গাড়ির সাইডের সেন্সর, গাড়ির ফ্লোরের সেন্সর, দরজার নিচের অংশের সেন্সরের মধ্যে দরকার হয় শক্ত যোগসূত্র। একসময়ে গাড়ির সাইডে দরজার সাথে টরসো এয়ারব্যাগ লাগানো থাকতো যা মানবদেহের Torso বা ধড় কে প্রতিরোধ করতো হতাহত থেকে। কিন্তু এই এয়ারব্যাগগুলো দরজার পাশে বসা যাত্রীর মাথা রক্ষা করতে তেমন দক্ষ ছিলোনা। তাই, এই সমস্যা সমাধানের জন্য গাড়ির ভেতরের অংশের ছাদের বাইরের দিকে এয়ারব্যাগ স্থাপন করা যায় যা Head side impact airbag বা Curtain Airbag নামে পরিচিত। এই এয়ারব্যাগ যাত্রীর মাথা রক্ষা করতে সক্ষম হয়।

প্রশ্ন জাগতে পারে ছাদ খোলা বা Convertible গাড়িগুলোতে কিভাবে Head side impact airbag থাকে? ছাদখোলা গাড়িতে হেড সাইড এয়ারব্যাগ স্থাপন করা হয় দরজার সাথে। ভলভো সি৭০ গাড়িতে প্রথম এধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো।

এয়াগব্যাগের অন্যান্য ব্যবহার

১। অনেক সময়ে গাড়ি দূর্ঘটনার কবলে পড়লে দূর্ঘটনার প্রভাবে গাড়ি গড়াগড়ি খেয়ে পড়ে, আমরা যেটাকে পাক খাওয়া বলি। গাড়ির এই পাক খাওয়ার ফলে মাথার সাথে গাড়ির সংঘর্ষে যাত্রী মারাত্মক আহত হতে পারেন, এক্ষেত্রে সাইড এয়ারব্যাগ মাথাকে রক্ষা করে পাক খাওয়ার সময়ে।

২। ২০০১ এর নভেম্বরে BMW তাদের 7er সিরিজের গাড়িতে knee airbag এর প্রচলন করে যা দুর্ঘটনার ফলে হাটুর ইঞ্জুরি প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে।

এয়ারব্যাগ গত কয়েকবছরে দূর্ঘটনার ফলে হতাহত বা মৃত্যুর সংখ্যা অনেকাংশে কমাতে সক্ষম হয়েছে এবং এর ধারাবাহিকতা সবসময়ে থাকবে। এছাড়া, দিন যাওয়ার সাথে সাথে এয়ারব্যাগ সিস্টেমের আরও উন্নতি সাধন হবে বলে আশা রাখি।

মেহরাব মাসাঈদ হাবিব
About the Author
মেহরাব মাসাঈদ হাবিব

মেহরাব মাসাঈদ হাবিব বাংলা অটোমোবাইল স্কুল এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। পড়াশোনা করেছেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি - বাংলাদেশ (এআইউবি) এ। তার লেখা বই "অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং আদি অন্ত" রকমারির প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে দীর্ঘদিন এক নাম্বার বেস্টসেলার এর স্থান ধরে রেখেছে।